একদিকে করোনার সংক্রমণ অন্যদিকে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড খরতাপ। তীব্র গরমে ঘাম বসে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অতিরিক্ত ঘামের কারণে অনেকে পানিশূন্যতায়ও ভূগছেন। এই গরমে সুস্থ থাকতে মসলা জাতীয় খাবার বাদ দিয়ে পানীয়ের উপরেই নির্ভর করতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রকৃতির চেয়ে বড়ো খেয়াল কেউ রাখে না! ভেবে দেখুন, শীতকালে আপনার জন্য এমন ফল আর সবজির ভান্ডার সাজিয়ে রাখে প্রকৃতি, যা শরীরে উষ্ণতা জোগায়।
গরমের দিনে হয় ঠিক উলটো। লাউ, কুমড়ো, পটল, ঝিঙের মধ্যে থাকে প্রচুর পানি, যা আপনাকে ঠান্ডা রাখে, আর্দ্র রাখে। সবচেয়ে বড়ো দান হচ্ছে গরমের ফল। আম, জাম, লিচু, বেল, শসা – আপনার শরীরে জোগান দেয় খনিজ, ইলেকট্রোলাইটের। ফলে সারাদিন ঘাম হয়ে যা হারাচ্ছেন, তা আবার ফিরে আসে।
আম
আমকে এদেশে এমনিই ফলের রাজা বলা হয় না! আমে প্রচুর ভিটামিন এ এবং সি থাকে। সেই সাথে থাকে একান্ত প্রয়োজনীয় আলফা ও বিটা ক্যারোটিনের মতো ফ্ল্যাভোনয়েড। তা আপনার চোখের দৃষ্টি ভালো রাখতে সাহায্য করে। আমে পটাশিয়াম থাকে। শরীরে তরলের সাম্য বজায় রাখতে পটাশিয়াম খুব প্রয়োজনীয়।
কালোজাম
কালোজাম ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। কালোজামের মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে। ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন সি, থিয়ামিন, রাইবোফ্লাভিন সমৃদ্ধ জাম খেলে পেট ভালো থাকে। দাঁত আর মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও কালোজাম অপরিহার্য।
পাকা বেল
পেট ঠান্ডা রাখতে পাকা বেলের কোনো জুড়ি নেই। পাকা বেলের মধ্যে থাকা ট্যানিন আমাদের ক্রনিক পেট খারাপের সমস্যা সারাতে সাহায্য করে। এছাড়া গ্যাসট্রিক আলসার কমাতে অনেক উপরকারি। পাকা বেল অ্যান্টি ভাইরাল ও অ্যান্টি মাইক্রোবায়ালও বটে। বেলের শাঁস কনস্টিপেশনের আশঙ্কা কমায়।
লিচু
লিচুতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে, সেই সঙ্গে থাকে প্রচুর ফাইবার। সেই সঙ্গে কপার আর ফসফরাসও থাকে প্রচুর পরিমাণে। ত্বক আর চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে লিচু। সেই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তে শর্করার পরিমাণ।
শসা
ভিটামিন এ, বি, সি, কে, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, আর পটাশিয়াম থাকে শসায়। সেই সঙ্গে শসায় পানির পরিমাণও অনেক বেশি। যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের পেট ভরানোর কাজেও শসা খুবই কার্যকর। শসা ত্বকের জন্যেও খুব ভালো।
তরমুজ
ঠান্ডা তরমুজ গরমে প্রশান্তি দেবে। তাই এই সময় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কয়েক টুকরা তরমুজ রাখতে পারেন। তরমুজের মধ্যে ৯০ শতাংশই পানি থাকায় এটি শরীরকে আরাম দেবে। ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ সমৃদ্ধ এই ফলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লাইকোপেন ক্যানসার প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে।
বিশুদ্ধ পানি গ্রহণের কথা ভুলে গেলে চলবে না। প্রতিদিন ২.৫ লিটার পানি গ্রহণ যথেষ্ট। ৩ লিটার পর্যন্ত গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে কিডনি রোগী ও ফ্লুয়িড রিটেনশন সিনড্রমের রোগীরা পানি গ্রহণের ব্যাপারে সতর্ক হোন ও আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
এই গরমে অতিরিক্ত তেল চরবি জাতীয় খাবার না খেয়ে, বেশি বেশি পানি জাতীয় ফল খান, সুস্থ থাকুন।